যে খাবার খেয়ে রোজায় 'ইমিউনিটি' বাড়াবেন
যে খাবার খেয়ে রোজায় ইমিউনিটি বাড়াবেন
রোজায় ইমিউনিটি বাড়াবেন |
রোজাই ইমিউনিটি বাড়ানোর মতো খাবার খাওয়া খুবই প্রয়োজন। কারন আমরা মুসলিমরা রমজান মাসে সারা দিন খাবার আর পানি থেকে বিরত থাকি।
আর সন্ধ্যাই মাগরিবের আজানের পর আমাদের ইফতের করি। সারা দিন রোজা থাকার কারনেও যেন শরীর একদম নিস্তেজ হয়ে যাই।
তারপর যখন ইফতের করা হয় তখন যেন শরীরে কর্মচঞ্চলতা ও শক্তি ফিরে পাই। ঠিক এই কারনেই আমরা দিন শেষে ইফতারে কি খাচ্ছি টার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
এই জন্য রমজান মাসে সুস্থ থাকতে আমাদের শরীরের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতি রোধক্ষমতা হতে হবে । তাহলেই আমরা রমজান মাসেও সারা দিন না খেয়েও বিভিন্ন রোগের হাত থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারব।
আমরা সকলে রোজা থাকার কারণে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকি। তাই যেন একবার খেলেই আমাদের শরীরের সব রকমের দরকারি পুষ্টি সরবরাহ হতে পারে এমন খাবার খাওয়া উচিত।
এমন কিছু খাবার রয়েছে যা খেলে আমরা সারা দিনের চলার মতো ইমিউনিটি পাই, যেটা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী।
এবং আমাদের শরীরে অনেক পরিমাণে পুষ্টি সরবরাহ করতে সক্ষম। এ জন্যই রমজান মাসে আপনার খাদ্য তালিকাই এমন কিছু খাবার রাখুন যেটা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াবে এবং ইমিউনিটি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
যার ফলে আমরা সারা দিন চলার মতো শক্তি সঞ্চয় করতে পারব। চলুন তাহলে যেনে নেওয়া যাক কি কি খাবার খেয়ে এই রোজায় ইমিউনিটি বাড়াবেন–
লাল ক্যাপসিকাম: অন্তত একটি করে লাল ক্যাপসিকাম খাওয়া। কারন একটি লাল ক্যাপসিকাম আর একটি সবুজ ক্যাপসিকামের মাঝে তফাত অনেক।
এটি আপনার শরীরের ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে খুব বেশি। এছাড়া আপনার ত্বককে স্বাস্থ্যকর করে তুলতে লাল ক্যাপসিকামে থাকা ভিটামিন সি অনেক সাহায্য করে।
এবং লাল ক্যাপসিকামে থাকা বিটা-ক্যারোটিন যা আমাদের শরীরে পৌঁছে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, আর আমাদের চোখ এবং ত্বককে সুস্থ রাখতে অনেক কার্যকরী ভুমিকা পালন করে।
এবং সর্দি-কাশি ঠেকাতেও ব্রকলি অনেক ভুমিকা পালন করে। অনেকের মতে, ব্রকলি রান্না করে খাওয়ার চাইতে স্টিমিং করে খেলে বেশি উপকার মেলে।
একটি সবুজ ক্যাপসিকামের চাইতে ২ গুণ ভিটামিন সি ও ৮ গুণ ভিটামিন এ সরবরাহ করে একটি লাল ক্যাপসিকাম।
ব্রকলি: ব্রকলি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় অনেক গুন । কারন ব্রকলিতে আছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং ফাইবার।
ব্রকলিতে অনেক পরিমান ভিটামিন থাকাই এটি আমাদের শরীরের ত্বকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে বাধা দেয়
সাইট্রাসজাতীয় ফল: ভিটামিন সি জাতীয় খাবার যেমন মুসাম্বি, আমলকি, কমলা, আঙুর ইত্যাদি ।
এই জাতীয় ফল গুলো খেলে রোজায় ইমিউনিটি বাড়াবে বেশি এবং রক্তের চাপ কমে। যার ফলে রক্তবাহিকায় কোনোভাবে প্রদাহ হলে , তা-ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহযোগীতা করে।
রসুন: যাদের অ্যাজমা, কফ, নিউমোনিয়ার সমস্যা রয়েছে প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে দুধে রসুন মিশিয়ে খেলে সমস্যা দূর হয়।
এতে শরীর অনেক চাঙা থাকবে। দুধের সঙ্গে রসুন মিশিয়ে খেলে খারাপ কোলেস্টেরল (মানে ব্যাড কোলেস্টেরল) কমাতে সাহায্য করে। ভাল কোলেস্টেরল বাড়াতেও সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: কাঁচা কলার উপকার গুলো জেনে নিন
আদাঃ যদি খালি পেটে আদা পানিতে ভিজিয়ে সেই আদা সহ পানি খাওয়া হয় তাহলে হজম শক্তি বাড়ে।
তাছাড়া আদা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম, বমি, পেটের ফুলা ভাব, ডাইরিয়া, বমি বমি ভাব দূর করতে সাহায্য করে।
তাছাড়া এটি আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে স্ট্রোক, হৃদরোগের মতো কঠিনতম রোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে থাকে।
তুলসী বীজ: তুলসীর বীজের গুণাগুণ অনেক বেশি। এতে রয়েছে আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম এবং ফাইবার,
যা আমাদের রক্তে মিশে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ। হজমেও এটি অনেক সহায়তা করে থাকে।
আরও পড়ুন: জেনে নিন প্রতিদিন আপেল খাওয়ার উপকারিতা এবং প্রতিদিন একটি আপেল খেলে কি হয়
তরমুজ: তরমুজ আমাদের শরীরকে অনেক ঠাণ্ডা রাখার পাশাপাশি অনেক ধরনের রোগ বালাই থেকে মুক্ত করে। কারন তমুজের প্রাই ৯০ ভাগই পানি।
তাই এটি আমাদের শরীরের এনার্জি বাড়াই ও হাইড্রেট রাখে। তাছারাও তরমুজে রয়েছে ভিটামিন সি এবং ক্যারোটিনয়েড। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই কার্যকরী।
আম: আমরা আমকে ফলের রাজা হিসাবেই চিনি। আমের মধ্যে রয়েছে অনেক ধরনের গুণাগুণ। যেমন- অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন, ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়াম থাকে প্রচুর পরিমাণে।
যা আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাছাড়া আম এর ভিতরে থাকা ফাইভার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে থাকে।
ডাব: ডাবের পানিতে ক্যালরি কম পরিমানে থাকলেও এতে থাকা পটাশিয়াম, সোডিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম আমাদের শরীরে খনিজ সরবরাহ করে থাকে।
পেঁপে: আমাদের শরীরদের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে পেপে অনেক কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে। অনেকে পেপেকে সুপারফুডও বলে থাকে।
এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে পাশা-পাশি ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেও মুক্তি দিতে পারে পেপে।
আশা করি আমরা আপনাদের বুঝাতে পেরেছি কিভাবে রোজায় 'ইমিউনিটি' বাড়াবেন। ধন্যবাদ।